নতুন গিলাফে আবৃত পবিত্র কাবা শরিফ

 


পবিত্র কাবা শরিফের কিসওয়া বা গিলাফ পরিবর্তন করা হয়েছে। কাবা শরিফের গিলাফ মিশমিশে কালো বর্ণের হয়। রেশমের তৈরি এ গিলাফ স্থাপন করা হয় ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবা শরিফের উপর। সোনার কারুকার্যখচিত এই গিলাফে কুরআনের আয়াত লেখা থাকে। সৌদি সরকার প্রতি বছর একই নমুনায় নতুন নতুন গিলাফ তৈরি করে।

মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববি পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বছর মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) এশার নামাজের পর নতুন গিলাফে আবৃত করা হয়েছে কাবা শরিফকে।


আগে হজের সময় অর্থাৎ আরাফাতের ময়দানে হাজিদের সমবেত হওয়ার দিন কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হতো। কিন্তু গত বছর হজের সময় ঐতিহ্য অনুযায়ী ৯ জিলহজ তারিখে গিলাফ পরিবর্তন করা হয়নি। এবারও সেই ধারা অক্ষুণ্ন রাখা হলো।


সৌদি আরবের সরকার হিজরি সনকে গুরুত্ব দিয়ে গিলাফ পরিবর্তনের কথা বলেছে। সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় দেশটিতে মহররম মাসের চাঁদ দেখা গেছে। নতুন বছরের চাঁদ দেখা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করা হলো পবিত্র কাবা ঘরের গিলাফ। এটি একটি ঐতিহাসিক পরম্পরা। এই কাজটি আগে হজের দিন করার রীতি থাকলেও গত বছর থেকে ১ মহররম হিজরি নববর্ষের প্রথম প্রহরে করা হচ্ছে।


বিশেষভাবে তৈরি গিলাফে প্রতি মিটারে দশ ধাপে লাগানো হয় ৯৯০০ সুতা। সৌদি আরবের উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. নাসের বিন আলি আল-হারেসির তথ্য থেকে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে পবিত্র কাবা শরিফে গিলাফ ব্যবহৃত হতো না।


কাবা শরিফের গিলাফের বাইরের কালো কাপড়ে স্বর্ণমণ্ডিত রেশম সুতা দিয়ে দক্ষ কারিগর দিয়ে ক্যালিগ্রাফি করা হয়। এরপর ঝারনিখ কালি দিয়ে প্রথমে কাপড়ে ক্যালিগ্রাফির আউটলাইন দেয়া হয়, তারপর কারিগররা হরফের ভেতর রেশম সুতার মোটা লাইন বসিয়ে স্বর্ণের সুতা দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে হরফ ফুটিয়ে তোলেন।


কাবা শরিফের গিলাফ নির্মাণে যেসব জিনিসপত্র প্রয়োজন সেগুলো তৈরির বিশেষ কারখানা মক্কার উমুল জুদ এলাকায় অবস্থিত। নতুন গিলাফ তৈরি করতে দরকার হয় ১২০ কেজি সোনার সুতা, ৭০০ কেজি রেশম সুতা ও ২৫ কেজি রুপার সুতা। গিলাফটির দৈর্ঘ্য ১৪ মিটার এবং প্রস্থ ৪৪ মিটার।


সূত্র: সৌদি প্রেস এজেন্সি


মন্তব্যসমূহ