Type Here to Get Search Results !

জাতীয়

6/col-left/জাতীয়

কক্সবাজারে পর্যটকদের আগ্রহের তালিকায় যোগ হয়েছে টেকনাফের সমুদ্র সৈকত

প্রথম আলো থেকে সংগ্রহ কৃত 


মুহাম্মদ কিফায়তুল্লাহ, টেকনাফ প্রতিনিধি।


কক্সবাজার বেড়াতে গেলেই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকে কলাতলী, সুগন্ধা কিংবা লাবনী পয়েন্ট। তবে কিছুদিন ধরে পর্যটকদের আগ্রহের তালিকায় যোগ হয়েছে টেকনাফের সমুদ্র সৈকত। তুলনামূলকভাবে নিরিবিলি আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে পর্যটকেরা মেরিন ড্রাইভ সড়ক ঘুরে ভিড় জমাচ্ছেন টেকনাফের তিন কিলোমিটার সৈকতে।


কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের দূরত্ব ৮৪ কিলোমিটার। সড়কের সর্বদক্ষিণের শেষ অংশটি মহেশখালীয়া পাড়া। এরপর সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক। এবারের ঈদের ছুটিতে টেকনাফের এই সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো।


টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের ছুটির গত চার দিনে এই সৈকতে অন্তত দুই লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে। এখন পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনও এখানে বেড়াতে আসছেন। এতে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে বলে আশা করছেন তিনি।


পর্যটন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৈকতের লোনা পানিতে শরীর ভিজিয়ে পর্যটকেরা যাচ্ছেন শহরের পূর্বদিকে নাফ নদীর মিয়ানমার সীমান্তে। সেখানে দেখা মেলে নাফ নদীর বুকে জালিয়ারদিয়া, স্থলবন্দর, পাশের ন্যাচার পার্ক ও এলিফেন্ট পয়েন্ট। এদিকে টেকনাফ মডেল থানার অভ্যন্তরে আছে মগ জমিদারকন্যা মাথিনের সঙ্গে কলকাতার সাহিত্যিক ও অভিনেতা ধীরাজ ভট্টাচার্যের প্রেমকাহিনির মাথিনকূপ। ঐতিহাসিক এই কূপ দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সেখানে ভিড় করেন। এ ছাড়া টেকনাফ যাওয়ার পথে মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে আছে পাহাড়ি ঝরনা, প্রাকৃতিক গুহা ও সুড়ঙ্গ, দরিয়ানগর পর্যটনপল্লি, পাথুরে সৈকত ইনানী ও পাটুয়ারটেক ইত্যাদি।


আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় টেকনাফ সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, তিন কিলোমিটার সৈকতের ৫ থেকে ৬টি পয়েন্টে অন্তত ২০ হাজার মানুষ ঘোরাঘুরি করছেন। সৈকতজুড়ে পড়ে আছে কয়েক শ রঙিন নৌকা। দৃষ্টিনন্দন এসব নৌকার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার সাগরের নীল জলরাশিতে গোসল করছেন। লোকসমাগম ঘিরে সৈকতের তীরে বসানো হয়েছে নাগরদোলা। এ ছাড়া মেরিন ড্রাইভের পশ্চিম দিকে অস্থায়ী দোকানপাটে চা-কফি, জুসসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার বিক্রি হচ্ছে। সৈকতের বিপরীতে গড়ে উঠেছে (মেরিন ড্রাইভের পূর্ব পাশে) একটি শিশুপার্ক। সেখানেও মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।


সকাল সাড়ে ৯টায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সৈকতে নামেন চট্টগ্রাম নগরের নাসিরাবাদ এলাকার ব্যবসায়ী রমজান আলী (৫০)। প্রথমে রঙিন নৌকায় ওঠে ছবি তুলেন তাঁরা। তারপর হাঁটুসমান পানিতে নেমে শরীর ভেজান। রমজান আলী বলেন, গত রোববার তিনি পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার আসেন। সেখানে সৈকতের পাশেই একটি তারকা হোটেলে উঠেছেন। গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত তাঁরা সুগন্ধা ও লাবনী পয়েন্টের সৈকতে ঘোরাঘুরি করেছেন। তবে সুগন্ধা ও লাবনী পয়েন্টে লাখো পর্যটকের ভিড়। তাই নিরিবিলি পরিবেশের খোঁজে আজ সকালে তাঁরা মেরিন ড্রাইভ হয়ে টেকনাফ সৈকতে এসেছেন।


ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী কাদির হোসেন (৫১) বলেন, এই সৈকত বেশ উপভোগ্য। তবে এই সৈকতে নিরাপত্তার দায়িত্বে তেমন কেউ নেই। সমুদ্রের পানিতে গোসলে নেমে কেউ নিখোঁজ হলে উদ্ধারের কাউকে পাওয়া যাবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.