সাবরাংয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে মা-মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনার প্রধান আসামী স্বামী গ্রেফতার


সাবরাংয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে মা-মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনার প্রধান আসামী স্বামী গ্রেফতার  

টেকনাফের সাবরাংয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে মা-মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী স্বামী আব্দুর রাজ্জাক (৪০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ১৯ আগস্ট ভোররাতে সাবরাং বেইঙ্গা পাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।  


টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর হাবিব সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ধৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। 
উল্লেখ্য গত ২ আগস্ট টেকনাফের সাবরাং বেইঙ্গা পাড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী রুমানা রুমি (৩০) আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে দুই সন্তানসহ পুকুরে ঝাঁপ দেয়। এসময় রুমানা রুমি ঘটনাস্থলেই মৃত্যৃবরন করে। স্থানীয়রা ছেলে মো. ইয়াসিন (৭)কে জীবিত উদ্ধার করলেও ৪০ দিন বয়সী শিশুকন্যার মৃতদেহ দুইদিন পর পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।  

এঘটনার তিনদিন পর নিহত রুমেনার ভাই মোহাম্মদ জুনায়েদ আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে রুমেনার স্বামী বেইঙ্গা পাড়া এলাকার পেটান আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৩০) সহ ২/৩ জন অজ্ঞাত আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। টেকনাফ থানার মামলা নং-১৬। 
মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর পূর্বে মোমেনার (২৮) েসাথে বিয়ে হয় আব্দুর রাজ্জাকের। তাদের দাম্পত্য জীবনে মোহাম্মদ নুর, ৬ বছরের ছেলে মোহাম্মদ ইয়াছিন এবং ০১ মাসের আয়েশা সিদ্দিকা আনিকা নামে মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী বিভিন্ন জনের প্ররোচনায় মোমেনাকে  প্রায় সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। বিদেশে থাকলেও ঠিকমতো পরিবারের ভরন পোষন করতো না স্বামী আব্দুর রাজ্জাক। ফলে প্রায় সময় পিতার বাড়িতে থাকতো সে। একপর্যায়ে দুই বছর পূর্বে বিদেশ থেকে একেবারে চলে আসে স্বামী। 

 পরে স্ত্রী সন্তানদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় সে। 
ঘটনার এক সপ্তাহ পূর্বে মোমেনা ভাই জোনায়েদকে জানায় যে, তার স্বামী আব্দুর রাজ্জাক মোমিনার বাড়ীতে থাকিয়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা একটি মেয়ে সহিত সম্পর্ক করে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে সে আর তেমন বাড়ীতে আসতো না। মোমেনার সাথে প্রতিনিয়ত খারাপ ব্যবহার করতো।  

এমনকি ঘটনার দিন তার স্বামী তাকে মোবাইলে ফোন করিয়া গালিগালাজ ও বকাঝকা করে এবং বাজার খরচের টাকা চাইলে বলেন যে, তুই তোর ছেলেমেয়ে দের নিয়ে বিষ খেয়ে মরে যা। তোর সাথে আর কোন ধরনের সম্পর্ক রাখব না। 
একপর্যায়ে সে ২ আগস্ট সকাল দশটার দিকে দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ীর পশ্চিম পাশের পুকুরে লাফ দিয়া আত্মহত্যা করে।  

টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর হাবিব জানান, তদন্ত সাপেক্ষে মামলার আসামীকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া অপর আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্যসমূহ