Type Here to Get Search Results !

জাতীয়

6/col-left/জাতীয়

বৈঠক শেষ করে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি


সৈয়দ আলম, টেকনাফ (কক্সবাজার) 

কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া ৪৯ রোহিঙ্গা পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ফিরে গেছে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফ ট্রানজিট জেটি দিয়ে কাঠের ট্রলারে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন প্রতিনিধি দলটি। এদিন জেটি দিয়ে মিয়ানমারের ২৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।

এর আগে মঙ্গলবার টেকনাফ সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউসে ১৬০ রোহিঙ্গা পরিবারের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করে মিয়ানমারের এই প্রতিনিধি দলটি। ওইদিন দলটির ৩৬ সদস্য সকালে টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি দিয়ে কাঠের ট্রলারে করে তৃতীয় বারের মতো বাংলাদেশ আসেন। ট্রলারে ১১ জন মাঝিমাল্লা ছিলেন, যারা সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।

বুধবার বিকালে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল ফিরে গেছে উল্লেখ করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) সামছু দৌজা বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের মতো রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎ নিয়ে তারা (প্রতিনিধি দল) মিয়ানমারে ফিরে গেছেন। যে কাজের জন্য তারা এসেছিলেন সেটি সম্পন্ন করেছেন। এখান থেকে যা যা তথ্য পেলেন তা তাদের কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে বলে জানিয়েছে প্রতিনিধি দলটি।টেকনাফের জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা নুর বশর জানান, রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে প্রায় একই রকমের বিষয় জানতে চাওয়া হয়। আজ প্রায় ৪৯ পরিবারের প্রায় ১০০ জন মানুষের সাক্ষাৎকার নেন তারা।

সাক্ষাৎ নেওয়া রোহিঙ্গারা বলেন,এখানে (বাংলাদেশে) আমরা আর থাকতে চাই না। নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই। কিন্তু এমনভাবে যেতে চাই যাতে আর মিয়ানমার থেকে ফিরতে না হয়।

মঙ্গলবার মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির রাখাইন প্রাদেশিক সরকারের ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর স নাইং। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অণু বিভাগের মহা-পরিচালক মিয়া মো. মাইনুল কবির।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মাইনুল কবির বলেছেন, প্রত্যাবাসন একটা প্রক্রিয়া। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি অনুযায়ী এই আলোচনা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ। বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করছি, যেন রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় তাদের দেশে ফেরত যেতে পারে। মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা আজ আরও কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। কালও আবার আসবে এই প্রতিনিধি দল।

এর আগে, ১৫ মার্চ ও ২৫ মে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল দুই দফায় বাংলাদেশে আসে। সে সময় প্রায় ৭০০ রোহিঙ্গাদের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে মিয়ানমার ফিরে যায় দলটি। তবে রাখাইনে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ দেখতে ৫ মে বাংলাদেশ সরকার ও রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দল রাখাইন সফর করে।

এদিকে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আট লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠিয়েছিল। এরপর মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি ফিরতি তালিকা পাঠানো হয়। গত বছর জানুয়ারিতে ওই তালিকা থেকে পরিবারভিত্তিক প্রত্যাবাসনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৪০ জনকে বাছাই করা হয় পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে। এর মধ্যে ৭১১ জনকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমার সম্মতি দিলেও বাকি ৪২৯ জনের ব্যাপারে তাদের আপত্তি ছিল। সে সময় ৪২৯ জনের তথ্য যাচাই-বাছাই করতেই মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছিল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.