টেকনাফ নিউজ,কক্সবাজার নিউজ,সারাদেশ, আন্তর্জাতিক, মাদক টেকনাফ, দৈনিক নাফ নিউজ, উখিয়া, পর্যটন, শিক্ষা, হ্নীলা,

Advertisement

test

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৩

চট্টগ্রাম-কক্সবাজারকে মাদক প্রবণ এলাকা ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার

 

মাদকের নিরাপদ ট্রানজিট জোন হিসেবে ব্যবহারের কারণে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকা ও কক্সবাজার জেলাকে অতীমাদক প্রবণ এলাকা ঘোষণা করার কথা ভাবছে সরকার। সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে মাদক প্রবেশের সব থেকে বড় এই রুটকে সরকার মাদকপ্রবণ অঞ্চল ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে রূপরেখা তৈরির কাজও চলমান রয়েছে।


প্রসঙ্গত, শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কোটালিপাড়া আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ এ ঘোষণার একদিন পরই সংসদীয় কমিটির এ সিদ্ধান্ত এলো।


রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।


কমিটির আগের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে চট্টগ্রাম মেট্রোপিলিটন এলাকা এবং কক্সবাজার জেলাকে মাদক প্রবণ এলাকা ঘোষণা করার বিষয়টি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ আসে।


রবিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই সুপারিশের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। সংসদীয় কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সকল বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয় সভায় গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য সূচি হিসেবে বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।


সভায় সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে মতবিনিময় করে চট্টগ্রাম মেট্রোপিলিটন এলাকা এবং কক্সবাজার জেলাকে মাদক প্রবণ এলাকা ঘোষণা করার বিষয়ে একটি রূপরেখা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।


বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির আগের বৈঠকে (১৫ জানুয়ারি ২০২৩) সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ্ আল মাসুদ চৌধুরী প্রসঙ্গটি তোলেন। মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হলেও উৎপাদনকারী দেশসমূহের কাছাকাছি অবস্থান, ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ মাদকে আক্রান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ, ভারত থেকে হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিল ও ইনজেক্টিভ ড্রাগের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটে। পরে তিনি সীমান্তবর্তী এলাকায় মাদক চোরাচালান রোধকল্পে নিশ্চিত সীমান্ত নিশ্চিতকরণ, স্যাটেলাইট ইমেজারি প্রযুক্তি স্থাপন এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন, চট্টগ্রাম জেলা ও কক্সবাজার লোকে মাদকপ্রবণ অঞ্চল ঘোষণা করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানান।’


ওই বৈঠকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের, মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘গত ৩ বছরে মিয়ানমার সীমান্তে বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে যে পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদক আটক করা হয়েছে তার মূল্য ১ হাজার ৯’শ কোটি টাকার বেশি।’


বৈঠকে ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. ফখরুল আহসান বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যা করছে, তা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে করছে। এরা রাতে ওপারে যায় এবং তাদের সহযোগিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাদক পাচার করছে। যে মাদক উদ্ধারের কথা জানা যায়, তা মূলত ২ বা ৩ শতাংশ মাত্র। এতে সহজেই অনুমান করা যায় কি বিশাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সেখানে সম্পৃক্ত। এ এলাকাটি মাদকের অভয়ারণ্য। এটিকে কঠোরভাবে দমন না করলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে। সেখানে মসজিদের ইমামও মাদক পাচারের সাথে জড়িত। এই এলাকার দিনের বেলায় এক চিত্র, রাতে তা সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। এ অবৈধ কর্মকান্ডের সঙ্গে স্থানীয় লোকও সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে।’


বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘মাদক পাচারের সঙ্গে, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি যিনিই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। মাদক ব্যবসায়ী যত শক্তিশালীই হউক না কেন, প্রধানমন্ত্রীর থেকে তারা শক্তিশালী নয়। ১৬ কোটি মানুষের স্বার্থের সাথে কোন আপস হতে পারে না। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে এখানে আশ্রয় দেয়া হয়েছে, এখানে বাস করতে হলে আমাদের দেশের আইন মানতে হবে।


তিনি বলেন, ‘বিএসএফ কাঁটা তারের বেড়া কাটলেই গুলি চালায়। এখানে তারের বেড়া কাটলে আমাদেরও কঠোর হতে হবে।’ কক্সবাজার অঞ্চল মাদক প্রবণ এলাকা বলেই এখানে সংসদীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।


কমিটির সদস্য পীর ফজলুর রহমার বলেন, ‘মাদক পাচারের বিভিন্ন রুটের মধ্যে কক্সবাজার রুটেই বেশীরভাগ মাদক প্রবেশের কথা জানা যায়। বর্তমানে মাদক পাচার কমে যাওয়ার পরিবর্তে এখন প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।’


পরে বৈঠকে কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদ জিরো পয়েন্টে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘মাদক পাচারের বড় রুট হিসেবে এ পয়েন্টটি চিহ্নিত হয়ে আছে।’


সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমিটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ ক্যাম্পসগুলোর বিদ্যুৎ বিল এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে মানবিক সেবায় নিয়োজিত সকল স্তরের পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, ফায়ারসার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ইউএিএইচসিআর থেকে ঝুঁকি ভাতা দেয়ার সুপারিশ করে।


কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, সামছুল আলম দুদু, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ এবং রুমানা আলী অংশ নেন।

কোন মন্তব্য নেই:

Post Top Ad

Your Ad Spot

পৃষ্ঠাসমূহ