রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শতাধক বসতি পুড়ে ছাই

 

মুহাম্মদ কিফায়তুল্লাহ,(কক্সবাজার) টেকনাফ প্রতিনিধি 

কক্সবাজারের উখিয়া বালুখালী ১০ ও ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুর ৩টায় ক্যাম্পের ‘বি’ ও ‘ই’ ব্লকে এই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডে ইতিমধ্যে ৫০টিরও বেশি বসতঘর পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

তিনি জানান, আজ দুপুরে ১১ নম্বর ক্যাম্পের একটি বাড়িতে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি টিম ও পরে জেলা হেড কোয়ার্টার থেকে আরও দুটি টিম আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। উখিয়া স্টেশনের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ‘বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগেছে। আমরা ঘটনাস্থলে। আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে।

ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) আমির জাফর বলেন, ‘ক্যাম্পে আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আমাদের লোকজন পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে। আগুনের তীব্রতা অনেক। এই মূর্হতে এর বাইরে কিছু বলা যাচ্ছে না।বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘হঠাৎ করে আমার শিবিরে আগুন জ্বলে উঠে। বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফায়ার সার্ভিস আসার আগে আমার লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি।

ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. সাইফুল বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পের একটি ঘরে প্রথম আগুনের ঘটনা ঘটে। বাতাসে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা সবাই মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। তবে আগুনের তীব্রতা অনেক।বর্তমানে ঘটনাস্থলে রয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী জানান, আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

এর আগে গত বছরের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীতে আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন ১৫ জন রোহিঙ্গা। তখন ১০ হাজারের মতো রোহিঙ্গার ঘর পুড়ে যায়। একই বছরের ২ জানুয়ারি উখিয়ার বালুখালী ২০ নম্বর ক্যাম্পে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত করোনা হাসপাতালে আগুন লাগে। এতে কেউ হতাহত না হলেও হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারের ১৬টি কেবিন পুড়ে যায়। এরপর একই বছরের ৯ জানুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়ার শফিউল্লাহ কাটা নামে একটি শরণার্থী শিবিরে এক অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৬০০ ঘর পুড়ে গিয়েছিল।

মন্তব্যসমূহ