হ্নীলার পূর্ব জাদিমুড়া এলাকায় ২ লক্ষ পিস ই'য়া'বা উ'দ্ধা'র সহ কা'র'বা'রি গ্রে'ফ'তা'র

 


মুহাম্মদ কিফায়তুল্লাহ,টেকনাফ 


টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউপির জাদিমোড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও নাফনদীর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন জাদি পাহাড়ের দক্ষিণ-পূর্ব পাশ যেন ফেমলী এন্ড নেইবার ক্রাইম জোন। এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ৪/৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক সরবরাহসহ বিভিন্ন অপরাধের রাজত্ব করে আসছে। অবশেষে এই আস্তানায় র‌্যাবের অভিযানে ২লাখ ইয়াবাসহ ১জন সদস্য আটক হলেও মূলহোতা মোঃ নুর ও সফিক নামে দুই সহোদর ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। 


গত ১৮মার্চ সকালে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর চৌকষ একটি আভিযানিক দল মায়ানমার হতে মাদকের একটি চালান এনে টেকনাফের হ্নীলার পূর্ব জাদিমুড়া এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারী ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু অবস্থানের র‌্যাবের গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত এলাকায় মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে যায়। এসময় র‌্যাবের অভিযান টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে কুখ্যাত মাদক চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সদস্য ইমান হোছনের পুত্র ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু (২১) কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারী তার নিজ বসত-ঘরে ইয়াবা মজুদ রয়েছে বলে স্বীকার করে। পরে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে বসত-ঘর তল্লাশী করে খাটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থা হতে ২লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।


গ্রেফতারকৃত ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করে। সে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাকারবারী চক্রের অন্যতম হোতা। সে উক্ত এলাকায় ভয়ংকর একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এবং তার নেতৃত্বে সিন্ডিকেটের সহযোগীরা বিভিন্ন পেশার আড়ালে তাদের সুবিধামত এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট ব্যবহারের মাধ্যমে ইয়াবার বড় বড় চালান দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে এসে কয়েক দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে বসত-ঘরে বিশেষ কায়দায় মজুদ করতো। মজুদকৃত মাদকের চালান স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার নির্ধারিত এজেন্টদের নিকট সুবিধাজনক সময়ে বিক্রি করে থাকে। পর্যায়ক্রমে পুনরায় বিপুল পরিমাণ মাদকের চালান বাংলাদেশে নিয়ে এসে কোন না কোন অভিনব কৌশলী পন্থায় মজুদ ও বিক্রয়ের মাধ্যমে তার এই রমরমা মাদক ব্যবসার প্রক্রিয়া চলমান ছিল বলে জানা যায়। মাদকের টাকা লেনদেনের বিষয়ে ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু জানায় যে,পার্শ্ববর্তী দেশ হতে ক্রয়কৃত মাদকের মূল্য বাবদ নগদ অর্থ প্রদান এবং কখনো কখনো হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পরিশোধ করতো। এই কাজে তার অপর দুই ভাই মোঃ নুর ও সফিকসহ প্রতিবেশী কয়েকজন সদস্য রয়েছে। তারা রোহিঙ্গা পারাপার, চোরাচালান ও মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করে তাদের অপরাধের সজ্জিত অক্ষত রেখেছিল। এই অপকর্ম সহজতর করতে প্রভাবশালী, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলত। অবশেষে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে তাদের অপকর্মের মুখোশ খুলে দেয়।

মন্তব্যসমূহ